ভবন নির্মাণ করতে শুধু অর্থ খরচই হয় না বরং লেগে যায় অনেকটা সময়। কষ্টের টাকাগুলো সঞ্চয় করে একটু একটু করে একটা ভবন নির্মাণ করতে হয়। অথচ সেই ভবনের যে-কোনো ক্ষয়ক্ষতি আমাদের অজান্তেই ঘটে যায়। আমরা সঠিক উপায় জানি না বলে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি না। ভবনের দেয়ালে নোনা ধরার এই সমস্যার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় আছে যেগুলো মেনে চললে নোনা ধরা থেকে ভবনকে আমরা বাঁচাতে পারি।
* ভবন নির্মাণে কম পোড়ানো ইট ব্যবহার করলে।
* যে মাটি দিয়ে ইট তৈরি করা হয় সে মাটিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকলে।
* বাড়ি তৈরির উপকরণ যেমন- বালি, সিমেন্ট, পানি প্রভৃতির মধ্যে লবনের পরিমাণ ২.৫% এর বেশি হওয়ার কারণে।
* সঠিক পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার অভাবে।
* দেয়ালের মাঝের পানির লাইনে ছিদ্র দেখা দিলে।
* দেয়ালে প্লাস্টার শুকানোর পূর্বেই অর্থাৎ ভেজা থাকা অবস্থায় দেয়াল রং করে ফেললে।
* গাঠনিক ত্রুটির কারণে।
* ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের অভাবে।
* মেঝে এবং ঘরের মাঝের দেয়ালে সঠিকভাবে সিক্ততা স্তর না দেওয়ার ফলে।
বাড়ি নির্মাণের পর নোনা দেখা যাওয়া আমাদের দেশের আবহাওয়ায় বেশ পরিচিত। একে তো বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে বছর জুড়ে সেই সাথে নির্মাণের সময়ে সতর্কতার অভাব। শখের বাড়িতে নোনা ধরে গেলে সেটা প্রতিকারের ব্যবস্থা করার কিছু উপায় রয়েছে।
* ভবনের যেসব স্থানে নোনা দেখা দিয়েছে সেই সব জায়গার রং, চুন ইত্যাদির প্রলেপ ভালোভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে আক্রান্ত স্থানসমূহ পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
* আক্রান্ত স্থানে এইচবিআরআই-এসপি তিন-চারবার এমনভাবে লাগাতে হবে যেন বালি সিমেন্টের আস্তরণটি সম্পূর্ণভাবে ভিজে যায়। একদিন অপেক্ষা করার পর এইচবিআরআই-এসপি লাগানোর স্থানসমূহকে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। ভিজা আস্তরণকে ভালোভাবে শুকানোর পর চুনকাম, রং, ডিসটেম্পার ইত্যাদি প্রলেপ প্রদান করতে হবে।
* ভবনের যেসব স্থানে এইচবিআরআই-ডিপি প্রয়োগ করতে হবে সেসব জায়গার রং, চুন, পুটিং ইত্যাদির প্রলেপ ভালোভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে আক্রান্ত স্থানসমূহ পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। শুকনো আস্তরণে এইচবিআরআই-ডিপি এর দ্রবণ দিয়ে ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হয়। ৩ ঘণ্টা অন্তর ৩/৪ বার এইচবিআরআই-ডিপি দ্রবণের আস্তরণ প্রয়োগ করতে হবে। একদিন পর পানি দিয়ে অতিরিক্ত এইচবিআরআই-ডিপি সরিয়ে ফেলতে হবে। এবং ভালোভাবে শুকানোর পর চুনকাম, রং, ডিসটেম্পার ইত্যাদির প্রলেপ প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ একই উপায়ে প্রয়োগ করতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী।
ভবনের দেয়ালে নোনা ঠেকানোর এই উপায়গুলো বেশ কার্যকরী। চেষ্টা করবেন ইট পাথরের সাথে পরিষ্কার পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। তারপর, সিলার বা প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ব্যবহার করুন। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ বরাবরই উত্তম।
বিপ্রপারটি ও হোম বিল্ডার্স ক্লাব অবলম্বনে।